হিরোশিমা ও নাগাসাকির হামলার ইতিহাস History of the attacks on Hiroshima and Nagasaki

হিরোশিমা ও নাগাসাকির হামলার ইতিহাস History of the attacks on Hiroshima and Nagasaki

 আগস্ট মাস ১৯৪৫ জাপানের প্রসিদ্ধ শহর হিরোশিমা নাগাসাকির আকাশে ঘনিয়ে আসে অভিশাপের কালো মেঘ যে অভিশাপ একমুহূর্তেই কেড়ে নেয় লক্ষাধিক মানুষের প্রাণ অভিশাপ এমন এক অভিশাপ যার রেশ এখনো পর্যন্ত জাপান পুরোপুরি ভাবে কাটিয়ে উঠতে পারেনি।

অন্য পোস্ট :  হযরত লোকমান হাকিম আর কাল নাগিন কি হয়েছিল What happened to Hazrat Lokman Hakim and Kal Nagin?

হিরোশিমা ও নাগাসাকির হামলার ইতিহাস History of the attacks on Hiroshima and Nagasaki
হিরোশিমা নাগাসাকির ইতিহাস

তো আসুন আজকে হিরোশিমা নাগাসাকি সেই ভয়াবহতার কথাই বলবযার কথা স্মরণ করলে শুধু জাপান নয় গোটা বিশ্বের চোখে জল এসে যায় ছোটবেলায় ইতিহাস বইয়ের পাতায় আমরা একবার হলেও জাপানের হিরোশিমা নাগাসাকিতে আমেরিকার পরমাণু বোমা হামলার কথা পড়েছি। প্রথম কথা বলে রাখি এই যুদ্ধের সূত্রপাত কিন্তু প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জাপানি করেছিল। কারণ এর আগে জাপান পাল হারবার আমেরিকান সমস্ত জাহাজ কেই বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়। 

 ১৯৩৯ সালে যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় তখন আমেরিকা প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধে জড়ায়নি কিন্তু তারা তাদের পরম বন্ধু ব্রিটেনকে যুদ্ধের যাবতীয় সরঞ্জাম দিয়ে প্রবল ভাবে সাহায্য করছিলএই কারণে জাপান ক্ষিপ্ত হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে অবস্থিত পাল হারবারে আমেরিকান জাহাজের ওপর তীব্র বোমাবর্ষণ চালায় এতে শাড়ির পর শাড়ি জাহাজ ধুলিস্যাৎ হয়ে যায়এই ঘটনাটি আমেরিকার যে

শুধুমাত্র ক্ষতি করেছে তাই নয় এই ঘটনা আমেরিকার আত্মসম্মানবোধকে বিপুলভাবে আহত করে। এছাড়াও ধারণা করা হয় এরপরেও জাপান আমেরিকার বিরুদ্ধে অপারেশন ডাউনফাল নামের আরও একটি প্রজেক্ট এর প্রস্তুতি নিচ্ছিল এর আন্দাজ পাওয়ামাত্রই আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান বড় বড় আধিকারিকদের সম্মতি নিয়ে জাপানের ওপর বদলার প্রস্তুতি শুরু করে দেয় কিন্তু এই বদলাবার আক্রোশ যে এতটা ভয়ানকভাবে সেটা কেই বা ধারণা করতে পেরেছিল ট্রুম্যান জাপানের প্রসিদ্ধ শহরগুলিতে বোমা ফেলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এই বোমা কোন সাধারন বোমা ছিলনা ছিল পরমাণু বোমা যে হামলায় পৃথিবীর প্রথম শেষ পরমাণু বোমা হামলা সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বল্প সময়ের মধ্যেই হাজার  

১৯৪৫ সালের আগস্ট সকাল ৮:১৫ তে জাপানের হিরোশিমা শহরে এয়ারক্রাফট এর মাধ্যমে আমেরিকা বোমা ফেলে এই বোমার নাম ছিল লিটল বয় এই বোমা মাটিতে এসে পৌঁছতে ৪৪. সেকেন্ড সময় নেই বোমা ফাটার সাথে সাথেই হিরোশিমা প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় মুহূর্তের মধ্যেই মৃত্যু হয় এক লাখেরও বেশি মানুষের এরপর রেডিয়েশনের কারনে মৃত্যু হয় আরও কয়েক হাজার মানুষের জাপান এই হামলার বদলা নেবে এটা ধারণা করা যায় কিন্তু সেই প্রস্তুতি নিতে না নিতেই 

আমেরিকা আরো একবার জাপানের নাগাসাকিতে আগস্ট বোমা ফেলে দেই এবার যে বোমা ব্যবহার করা হয়েছিল তার নাম ছিল ফ্যাটম্যান এক্ষেত্রে সাথে সাথে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ৮০ হাজার মানুষের এরপর রেডিয়েশনের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা টা না হয় ছেড়ে দিলাম হিরোশিমা নাগাসাকি দুটি পরমাণু হামলার মোট মৃত্যু হয়েছিল প্রায় আড়াই লাখেরও অধিক মানুষের এরপরেও পরবর্তী দুই বছরে ক্যান্সারজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে প্রায় অজস্র মানুষের অনুনে জল গরম করার সময় ১০০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় জল ফুটে ওঠে কিন্তু হিরোশিমা হামলার সময় শহরের যে জায়গায় বোমা ফেলা হয়েছিল তার টেম্পারেচার বেড়ে হয়েছে প্রায় লক্ষ ডিগ্রী সেলসিয়াস। জাপানের বিরুদ্ধে আমেরিকার এই বদলা টা যে কতটা ভয়ঙ্কর ছিল সেটার আন্দাজ আপনি করতে পারছেন এই সময় ১২৫ কিলোমিটার ঘন্টা বেগে চারি দিকে ছড়িয়ে পড়ছিল এই পরমাণু বোমার রেডিয়েশন এতটাই পাওয়ারফুল ছিল যে আজও সেখানে জন্ম নেওয়া অসংখ্য 

শিশু শারীরিক বা মানসিক ভাবে প্রবল কমজোরি হয়ে অনুযায়ী আগস্ট নাগাসাকিতে নয় বরং জাপানের অন্য একটি শহর কহু রাতে বোমা ফেলার কথা ছিল কিন্তু সেই সময় কহুরার আবহাওয়া খারাপ থাকার দরুন সেখানে বোমাবর্ষণ করাটা 

জরইল ছিল যেকারনে আমেরিকা এর নিকটবর্তী শহর নাগাসাকিতে বোমা ফেলে দেয় বোমা নিক্ষেপ করে এই বিমানে এক ডজন পটাশিয়াম সায়ানাইডের বলিরেখা ছিল যাতে দুর্ভাগ্যবশত যদি ফেল হয় তখন জাপানি সেনাদের হাতে মরার আগেই বা তথ্য লোপাটের আগেই আমেরিকার এই অফিসাররা তা খেয়ে মরতে পারে এর আগেও এই দুটি মিশন এর আগে আমেরিকার টেস্টিং এর জন্য জাপানের অসংখ্য জায়গায় অজস্র বোমা ফেলেছিল যে কারণে মৃত্যু হয়েছে অসংখ্য মানুষের নাগাসাকিতে পরমাণু হামলার পর জাপানের রাজা হিরোহিতো  

১৪ আগস্ট আমেরিকান চার্জার কাছে পরাজয় স্বীকার করে যদি তখনো হিরোহিতো সারেন্ডার না করতো তাহলে আমেরিকা ১৯ আগস্ট জাপানের আরো একটি শহরে পরমাণু বোমা ফেলা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল ওলিয়েন্ডার নামের এক প্রকার ফু্ল আছে যেটি জাপানের ওপর এই পরমাণু হামলার পাঁচ মাস পর পুনরায় জন্ম নিয়েছিল যে কারণে এই ফুলকে হিরোশিমার অফিশিয়াল ফুল বলা হয় জাপানের এই এটমবোম অ্যাটাক সম্পর্কিত একটি অবাক করা তথ্য আছে ছোট ইয়ামাগুচি নামের একজন জাপানি ব্যক্তি হলেন একমাত্র ব্যক্তি যিনি এই দুটি পরমাণু হামলা স্বচক্ষে দেখে বেঁচে ছিলেন আসলে হিরোশিমাই যখন বোমা ফেলা হয় তখন তিনি কর্মসূত্রে সেখানে উপস্থিত ছিলেন এরপর সেখান থেকে বেঁচে যাবার পর

নিজের আসল বাসস্থান নাগাসাকিতে ফিরে যায় এরপর সেখানেও বোমা ফেলা হয় এবং এবারও সৌভাগ্যবশত ইয়ামাগুচি বেঁচে যায় ইতিমধ্যেই ২০১০ সালে ইয়ামাগুচি ক্যান্সারজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন জাপানের মানুষ এই দুটি পরমাণু হামলায় মৃত মানুষদের স্মৃতিতে একটি তখন শিক্ষার প্রচলন করে যেটা কখনোই নেবে না সেই দিনই এই শিখা নেভানো হবে যেদিন পৃথিবীর সমস্ত পরমাণু বোমা নষ্ট করে দেওয়া হবে বন্ধুরা যুদ্ধ কখনোই মানুষকে কিছু দেয় না বরং অনেক কিছুই করে নাই প্রথম বা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ মানব সভ্যতার অগ্রগতি কে কয়েক বছর পিছিয়ে দিয়েছে বর্তমানে কাশ্মীরে ভারত এবং পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব কোনোভাবেই থামানো সম্ভব হচ্ছে না যে কারণে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার প্রবলক সম্ভাবনা থেকেই যায় আপনার কি মনে হয় কিভাবে এই গম্ভীর সমস্যার সমাধান করা সম্ভব

 

    

 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url